ঢাকা    শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
গণবার্তা

বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ানো হয় ইউনিট সংখ্যা

৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে কড়াইল বস্তির ভয়াবহ আগুন, খোলা আকাশের নিচে আশ্রয়ে হাজারো মানুষ

৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে কড়াইল বস্তির ভয়াবহ আগুন, খোলা আকাশের নিচে আশ্রয়ে হাজারো মানুষ

রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ছড়িয়ে পড়ার পর অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম খুদে বার্তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কীভাবে শুরু হলো আগুন

ফায়ার সার্ভিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কড়াইল বস্তির বউবাজার এলাকার কুমিল্লা পট্টি, বরিশাল পট্টি ও ‘ক’ ব্লকে আগুন লাগে। প্রাথমিকভাবে ১১টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করলেও আগুনের তীব্রতা বাড়ায় পরে আরও ৮টি ইউনিট যোগ দেয়।

স্থানীয়দের ভাষ্য, আগুন লাগার স্থানগুলোতে হাজারখানেক ঘর ছিল। টিনশেডের ঘর কাছাকাছি হওয়ায় আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

বস্তিবাসীর আতঙ্ক ও ক্ষয়ক্ষতি

কুমিল্লা পট্টির বাসিন্দা মো. আব্বাস আলী বলেন, “আগুন লাগার পর কয়েক মিনিটেই চারপাশে ছড়াতে থাকে। সবাই জীবন বাঁচাতে ঘর ছেড়ে দৌড়াতে থাকে।”

অন্যদিকে বায়তুল আমান এলাকায় স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে ভিড় নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন আবদুর রহিম। তিনি জানান, মানুষ আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় অনেক ঘর ফাঁকা পড়ে আছে। চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে পুলিশ, আনসার ও স্থানীয়রা মিলে আগুন লাগা এলাকায় প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।

হাজারো মানুষ খোলা আকাশের নিচে

ঘরবাড়ি হারিয়ে হাজারো মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন কাছাকাছি খামারবাড়ি ঈদগাহ মাঠ, এরশাদ স্কুলমাঠ ও টিঅ্যান্ডটি মাঠে। খামারবাড়ি মাঠে সারি সারি মালপত্র, বিছানা, বাসনকোসা রেখে শতাধিক পরিবারকে বসে থাকতে দেখা গেছে।

টিঅ্যান্ডটি মাঠে পরিস্থিতি আরও করুণ—হালকা শীত থেকে বাঁচতে মানুষ কাঠ, প্লাস্টিক পুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে বসে আছেন। সঙ্গে আছে শিশু, বয়স্ক ও অসহায় পরিবারগুলো।

“ঘরটা হয়তো পুড়েই গেছে” — একজন অটোরিকশাচালকের কান্না

খামারবাড়ি মাঠে কথা হয় অটোরিকশাচালক রবিন শেখের সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁদের ঘর ছিল কুমিল্লা পট্টির মায়ের দোয়া স্কুলের পাশে।

রবিন বলেন,

“সাড়ে পাঁচটার দিকেই আগুন খুব কাছে চলে আসে। তাপে ঘরে থাকা যাচ্ছিল না। বেরিয়ে আসার পর আর ফিরে যেতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে আমাদের তিনটা ঘরই পুড়ে গেছে।”

রবিনের স্ত্রী নুরেনা বেগম যোগ করেন,

“আগুন বরিশাল পট্টি থেকে আসে। এত দ্রুত চারদিকে ছড়ায় যে আমরা দুইটা র‍্যাক ছাড়া কিছুই আনতে পারিনি।”

আগুনের কারণ এখনো অজানা

ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনের উৎস কী—তা এখনও তদন্তাধীন। ক্ষতির পরিমাণও আনুষ্ঠানিকভাবে নিরূপণ হয়নি, তবে স্থানীয়রা মনে করছেন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।

আপনার মতামত লিখুন

গণবার্তা

শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫


৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে কড়াইল বস্তির ভয়াবহ আগুন, খোলা আকাশের নিচে আশ্রয়ে হাজারো মানুষ

প্রকাশের তারিখ : ২৫ নভেম্বর ২০২৫

featured Image
রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ছড়িয়ে পড়ার পর অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম খুদে বার্তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।কীভাবে শুরু হলো আগুনফায়ার সার্ভিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কড়াইল বস্তির বউবাজার এলাকার কুমিল্লা পট্টি, বরিশাল পট্টি ও ‘ক’ ব্লকে আগুন লাগে। প্রাথমিকভাবে ১১টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করলেও আগুনের তীব্রতা বাড়ায় পরে আরও ৮টি ইউনিট যোগ দেয়।স্থানীয়দের ভাষ্য, আগুন লাগার স্থানগুলোতে হাজারখানেক ঘর ছিল। টিনশেডের ঘর কাছাকাছি হওয়ায় আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।বস্তিবাসীর আতঙ্ক ও ক্ষয়ক্ষতিকুমিল্লা পট্টির বাসিন্দা মো. আব্বাস আলী বলেন, “আগুন লাগার পর কয়েক মিনিটেই চারপাশে ছড়াতে থাকে। সবাই জীবন বাঁচাতে ঘর ছেড়ে দৌড়াতে থাকে।”অন্যদিকে বায়তুল আমান এলাকায় স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে ভিড় নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন আবদুর রহিম। তিনি জানান, মানুষ আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় অনেক ঘর ফাঁকা পড়ে আছে। চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে পুলিশ, আনসার ও স্থানীয়রা মিলে আগুন লাগা এলাকায় প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।হাজারো মানুষ খোলা আকাশের নিচেঘরবাড়ি হারিয়ে হাজারো মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন কাছাকাছি খামারবাড়ি ঈদগাহ মাঠ, এরশাদ স্কুলমাঠ ও টিঅ্যান্ডটি মাঠে। খামারবাড়ি মাঠে সারি সারি মালপত্র, বিছানা, বাসনকোসা রেখে শতাধিক পরিবারকে বসে থাকতে দেখা গেছে।টিঅ্যান্ডটি মাঠে পরিস্থিতি আরও করুণ—হালকা শীত থেকে বাঁচতে মানুষ কাঠ, প্লাস্টিক পুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে বসে আছেন। সঙ্গে আছে শিশু, বয়স্ক ও অসহায় পরিবারগুলো।“ঘরটা হয়তো পুড়েই গেছে” — একজন অটোরিকশাচালকের কান্নাখামারবাড়ি মাঠে কথা হয় অটোরিকশাচালক রবিন শেখের সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁদের ঘর ছিল কুমিল্লা পট্টির মায়ের দোয়া স্কুলের পাশে।রবিন বলেন,“সাড়ে পাঁচটার দিকেই আগুন খুব কাছে চলে আসে। তাপে ঘরে থাকা যাচ্ছিল না। বেরিয়ে আসার পর আর ফিরে যেতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে আমাদের তিনটা ঘরই পুড়ে গেছে।”রবিনের স্ত্রী নুরেনা বেগম যোগ করেন,“আগুন বরিশাল পট্টি থেকে আসে। এত দ্রুত চারদিকে ছড়ায় যে আমরা দুইটা র‍্যাক ছাড়া কিছুই আনতে পারিনি।”আগুনের কারণ এখনো অজানাফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনের উৎস কী—তা এখনও তদন্তাধীন। ক্ষতির পরিমাণও আনুষ্ঠানিকভাবে নিরূপণ হয়নি, তবে স্থানীয়রা মনে করছেন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।

গণবার্তা

সম্পাদকঃ নূর মোহাম্মদ 
প্রকাশকঃ ফিরোজ আল-মামুন 

কপিরাইট © ২০২৫ সর্বস্ব সংরক্ষিত গণবার্তা