নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংক—নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক (এনআরবি)—বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) নতুন ১০০ রুপির নোট বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। হালনাগাদকৃত এই নোটে যে মানচিত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভারতের দাবি, এই তিনটি এলাকাই তাদের ভূখণ্ডের অংশ। এ কারণে নেপালের এই পদক্ষেপ নতুন করে দুই দেশের মধ্যে পুরোনো সীমান্ত বিরোধকে সামনে নিয়ে এসেছে।
নতুন নোটটির বাম পাশে রয়েছে মাউন্ট এভারেস্টের ছবি এবং ডান পাশে নেপালের জাতীয় ফুল রডোডেনড্রনের ওয়াটারমার্ক। নোটের পিছনের অংশে হালকা সবুজ রঙে প্রকাশ করা হয়েছে নেপালের মানচিত্র, যার পাশেই রয়েছে অশোকস্তম্ভ—যেখানে ‘লুম্বিনী, গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান’—বলে উল্লেখ আছে। পেছনে আরও রয়েছে এক শৃঙ্গ গন্ডারের ছবি।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই নোটে ব্যবহার করা হয়েছে নিরাপত্তা সুতা ও উঁচু কালো ডট, যা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নোট শনাক্তে সহায়তা করবে। নোটটিতে এনআরবির সাবেক গভর্নর মহা প্রসাদ অধিকারীর স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে। ইস্যুর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২০৮১ বিক্রম সম্বত, যা ২০২৪ সালের সমতুল্য।
এনআরবির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগের ১০০ রুপির নোটেও মানচিত্র ছিল, তবে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার সেটিতে সংশোধিত সীমান্তসংবলিত মানচিত্র সংযোজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “নেপালের অন্যান্য মূল্যমানের নোটে মানচিত্র থাকে না; শুধুমাত্র ১০০ রুপির নোটেই মানচিত্র ব্যবহার করা হয়।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মে মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি নেতৃত্বাধীন সরকার লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরা অঞ্চলকে নেপালের ভূখণ্ড দাবি করে নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করে। পরে দেশটির সংসদও সেই মানচিত্র অনুমোদন দেয়। সে সময় এই পদক্ষেপকে ‘একতরফা সিদ্ধান্ত’ বলে সমালোচনা করেছিল ভারত। দিল্লির দাবি, নেপালের এ ধরনের ‘কৃত্রিম সীমানা সম্প্রসারণ’ ভারত গ্রহণযোগ্য নয় এবং তিনটি অঞ্চল তাদেরই সার্বভৌম অংশ।
নেপাল মোট ১ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার সীমান্ত ভাগ করে পাঁচটি ভারতীয় রাজ্যের সঙ্গে—সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড। নতুন নোট প্রকাশকে ঘিরে সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দুই দেশের কূটনৈতিক আলোচনা আবারও আলোচনায় আসতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।

শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৮ নভেম্বর ২০২৫

আপনার মতামত লিখুন